Disneyland 1972 Love the old s
Blog
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল।
Muhammad Mostofa Kamal

বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলা জেলার দৌলতখান থানার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাবিবুর রহমান ও মাতার নাম মোসাম্মৎ মালেকা বেগম। তার পিতা সেনাবাহিনীর একজন হাবিলদার ছিলেন। তিনি কুমিল্লা সেনানিবাসে, চাকরি করার সময় কিশোর মোস্তফা সেনাবাহিনীর প্যারেড ও নিয়মশৃঙ্খলা দেখে মুগ্ধ হন এবং বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবার স্বপ্ন দেখেন। তিনি ছোট থেকেই ছিলেন খুব সাহসী ও ডানপিটে। মাত্র পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন মোস্তফা কামাল।১৯৬৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর (২০ বছর বয়সে) তিনি বাড়ী থেকে পালিয়ে গিয়ে, সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক ছিলেন। যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টর। ১৯৬৮ সালে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের কুমিল্লা থেকে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট আশুগঞ্জে অবস্থান নেন। এর কিছুদিন পরেই আশুগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির পেছনে হেলিকপ্টার যোগে অসংখ্য পাক সেনা নামানো হল।মুক্তিযোদ্ধারা কৌশলে, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া-আখাউড়া রেললাইন হয়ে চলে যায় আখাউড়ায়। তারা আখাউড়াকে কেন্দ্র করে ৩টি প্রতিরক্ষা ঘঁটি গড়ে. তোলেন। ঘঁটিগুলো ছিল- তিতাস নদীর ব্রীজে, আখাউড়ার দক্ষিনে গঙ্গাসাগরে এবং তারও উত্তরে দরুইন গ্রামে।
548760f9e1a265cedf5602d84961bfab
ইতিমধ্যেই মোস্তফা কামালের সাহস,বুদ্ধি ও কর্মৎপরতা মুগ্ধ করে মেজর সাফায়াত জামিলকে। তাই তিনি তাকে ২নং প্লাটুনের ল্যান্স নায়েকের দায়িত্ব দেন। এই ২নং প্লাটুনকেই দরুইন গ্রামের প্রতিরক্ষা ঘাঁটির দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭১ সালের ১৮ ই এপ্রিল আকাশে সকাল থেকে কালো মেঘের ছড়াছড়ি। সেই সাথে আকাশে কয়েকটা পাক হেলিকপ্টারের আনাগোনা। তা দেখে মোস্তফা কামাল পরিখায় সতর্ক অবস্থান নেন। বেলা তখন ১১টা শুরু হল প্রচন্ড বৃষ্টি আর সাথে পাক সেনাদের গোলাবর্ষন। কিছুক্ষনের মধ্যেই পাকবাহিনী মোগরা বাজার ও গঙ্গাসাগরের অবস্থান নিয়ে নেয়। এবার তারা এ দু'স্থান থেকে, মারাত্মকভাবে গোলাবর্ষন শুরু করে।বেলা তখন ১২টা আক্রমানের তীব্রতা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এবার পশ্চিম দিক থেকে সরাসরি আক্রমন। এরফলে উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম তিন দিক থেকেই পাক সেনারা দরুইন ঘাঁটি ঘিরে ফেলে।এমন পরিস্থিতিতে মোস্তফা কামাল উপায় না দেখে নিজেই পরিখার মধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে সরাসরি পাক সেনাদের ওপর এল. এম. জি (মেশিনগান) দিয়ে কভারিং ফায়ার শুরু করে এবং তার সহযোদ্ধাদের বলেন, তোমরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নাও। কিন্তু তাকে রেখে অন্যরা যেতে চায়না। তখন তিনি বলেন, সবাই বাঁচতে চাইলে কেউ বাঁচতে পারবনা, আমার আশা তোমরা ছেড়ে দাও। তিনি একাই পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে গড়ে তোলেন একটি শক্তিশালী দুর্গ। উত্তর,দক্ষিণ ও পশ্চিমের পাক সেনাদের উপর তিনি সমানে এল. এম. জির গুলি চালাতে থাকে। তার গুলির তোরে পাকবাহিনী স্তব্ধ হয়ে পড়ে। এমন সুযোগে তাঁর সংগীরা পূর্ব পথে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
Mostafa Kamal Tomb
ক্রমাগত গুলি চালাতে চালাতে একসময় ফুরিয়ে যায় তার এল. এম. জির কার্টিজ। এমনি এক মুহূর্তে পাকবাহিনীর ত্রিমুখী আক্রমণ তাঁর উপর গুলি চালাতে থাকে।বৃষ্টির মত গুলিতে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় মোস্তফার শরীর। তীব্র গুলির আঘাতে নিজের পরিখাতেই ঢলে পরেন মোস্তফা। এরপরেও কিছুটা প্রাণের অস্তিত্ব থাকলেও পাকবাহিনী তা বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে নিঃশেষ করে দেয়। সংগীদের জীবন বাঁচাতে আত্মত্যাগ করেন নিজের জীবন। তাঁর এমন বীরত্বের কারনেই মৃত্যুর খুব কাছে থেকেও বেঁচে যায় অনেকগুলো তাঁজা প্রাণ।পরবর্তীতে দরুইন গ্রামের স্থানীয়রা বুলেটে ঝাঁঝরা ও বেয়নেটবিদ্ধ মোস্তফা কামালের লাশ সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে গ্রামের পশ্চিম প্রান্তে সবুজ ধানক্ষেতের পাশে গাছগাছালির ছায়ায় দাফন করেন।
Home |
Back |
Top ^




U-ON
Bhola, Bangladesh
Home |
Back |
Top ^

Www.Bhola.Waphall.Com